সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বর সংলগ্ন এলাকায় ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ স্থাপনের দাবি জোরালোভাবে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের মতে, এই স্থানটি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সর্বোত্তম, কারণ এটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত।
হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ এলাকা, যা সাধারণভাবে সিরাজগঞ্জ রোড নামে পরিচিত, দেশের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবেও পরিচিতি পাচ্ছে। এখানে ৭৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক ইন্টারচেঞ্জ, যেখান থেকে দেশের যে কোনো জেলায় যাতায়াতের জন্য ২৪ ঘণ্টাই যানবাহন পাওয়া যায়।
যোগাযোগের সোনালী দ্বার:
এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ২ লেনের মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান রয়েছে সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায়। এতে থাকছে ৪টি ফ্লাইওভার, ২টি রেলওয়ে ওভারব্রিজ, ৩৯টি আন্ডারপাস এবং ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লিংক রোড। এই উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হলে হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ হয়ে চলাচলকারী যানবাহন এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নও তরান্বিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসা সুবিধায় বিপ্লব ঘটাতে পারে হাটিকুমরুল:
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের রোগীদের চিকিৎসার চাপ মূলত বগুড়া ও রাজশাহী মেডিকেলে গিয়ে পড়ে। হাটিকুমরুলে একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল হলে তা এই চাপ কমাবে এবং সাধারণ মানুষ দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাবে।”
জনসাধারণের মতামত:
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনা বেগম বলেন, “বড় হাসপাতাল দূরের শহরে থাকলে গরিব মানুষের পক্ষে চিকিৎসা নেওয়া কঠিন। হাটিকুমরুলে হলে সবাই সহজে আসতে পারবেন।”
চীন-বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগিতা:
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের কথা জানানো হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য স্থান নির্বাচনের কাজ চলমান রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে হাটিকুমরুল এলাকার পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানানো হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ সংলগ্ন এলাকাকে ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’-এর জন্য বিবেচনা করা হয়। এখানে হাসপাতাল স্থাপন করা হলে শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, বরং পুরো দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার এই কেন্দ্রে একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল এখন সময়ের দাবি—এমনটাই বলছেন সকলে।
0 coment rios: