Friday, 4 April 2025

বৈষম্যহীন সু-সম উন্নয়নে সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্র ও শ্রেণি পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে কাজিপুরের সার্বিক উন্নয়ন করতে চাই-মাওলানা শাহিনুর আলম

 



নিজস্ব প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চাইতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের কিছু ভিন্নতা রয়েছে, মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে। সেই পার্থক্য হলো- একে বারে ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতা নির্বাচন করা হয় দলের গঠনতন্ত্র ও প্রটোকল মেনে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি সু-শৃঙ্খল দল।তাই যে কারও হুট করে নেতা হবার সুযোগ নেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে। দলের জন্য ত্যাগী, দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা নিবেদিত প্রাণ এবং নেতা-কর্মীদের সমর্থন ও মতামতের ভিত্তিতে নেতা নির্বাচন করা হয়। কেন্দ্রের কোনো সিদ্ধান্ত দলের নিম্ন পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সুশৃঙ্খল ভাবে মেনে চলা হয়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিরাট গুরুত্ব বহন করে। সেই গুরুত্বকে প্রাধান্য দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা বাংলাদেশে দুই শতাধিক সংসদীয় আসনে ইতোমধ্যেই প্রার্থীতা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।। ক্ষেত্রে দলের জন্য ত্যাগী, নিষ্ঠাবান, সৎ, দক্ষ ও নিবেদিত কর্মীকে বেছে নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জে ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থীতা ঘোষণা করা হয়েছে। এই জন্য দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো প্রকার বিরোধ, দ্বন্দ্ব ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি যা অন্যান্য দলে একেবারেই সম্ভব নয়। সিরাজগঞ্জে ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর-সদর আংশিক), সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ), সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী), সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) ও সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) এই পাঁচটিতে প্রার্থীতা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে (তাড়াশ রায়গঞ্জ) প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। সিরাজগঞ্জে-১ (কাজিপুর ও সদরের একাংশ) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য বিনয়ী, সৎ, দক্ষ ও কর্মীবান্ধব নেতা মাওলানা শাহিনুর আলমকে সংসদ সদস্য নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সু-শিক্ষিত মাওলানা শাহিনুর আলম, কাজিপুর উপজেলার পাইকরতলী, গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মাওলানা ফজলুর রহমান একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। মাতা শাহার বানু এক সফল গৃহীনি। তিনি বর্তমানে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের সয়া ধানগড়ামধ্যপাড়ায় বসবাস করছেন।মোঃ শাহিনুর রহমান ১৯৯০ সালে দাখিল, ১৯৯৩ সালে আলিম, ১৯৯৫ সালে ফাযিল, ১৯৯৭ সালে কামিল পাশ করেন। এছাড়া ১৯৯৬ সালে বিএসএস সম্মান, ১৯৯৭ সালে এমএসএস, ২০১৩ সালে তিনি এলএলবি পাশ করেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির হিসেবে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শাহিনুর আলম ১৯৮৫ সালের ২৫ মে ছাত্র শিবিরের মাধ্যমে জামায়াত রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি ছাত্র শিবিবের শেরপুর উপজেলার একটি উপ-শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে। ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি শেরপুর আলিয়া মাদ্রাসা শাখার অর্থ সম্পাদক ও ৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি শেরপুর পৌরসভার অর্থ সম্পাদক এবং ১৯৯৩ সালে শেরপুর পৌরসভার পাঁচ মাস সভাপতি ও ১৯৯৩ সালে সিরাজগঞ্জ শহর শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ছাত্র শিবির সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারি ও ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। শাহিনুর আলম ১৯৯৮ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ শহর শাখার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি ও ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত জেলা জামায়াতের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৪ সাল থেকে তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরাসদস্য হিসেবে অধ্যাবধি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। রাজনীতির পাশাপাশি নানা সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। সিরাজগঞ্জ জেলার তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম ব্যতিক্রমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ট্রাষ্ট সিরাজগঞ্জ দারুল ইসলাম ট্রাষ্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়া দারুল ইসলাম একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় ও সিমলা ডিগ্রি কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজিপুরের খাসশুড়িবৈড় ঈদগাহ ময়দানের খতিবের দায়িত্ব পালন করছেন। সু-শিক্ষিত মেধাবি এই রাজনীতিবিদ কাজিপুর মহিলা কলেজের প্রভাষক ও সিরাজগঞ্জ দারুল ইসলাম একাডেমির অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ব্যবসা করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। শাহিনুর আলমের পরিবারও শিক্ষিত। তাদের সন্তানদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধর্মীয় শিক্ষার সাথে সমন্বয় করে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলছেন। শাহিনুর আলমের স্ত্রী মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস জলি দারুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ। শাহিনুর আলম ও মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস জলি দম্পতির মেয়ে মোছাঃ সাদিরা নুসরাত মেডিকেলে পড়ছেন ছেলে মোঃ জারিফ জুন নাইম ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছেন। তুখোড় ও ত্যাগী রাজনীতিবিদ মোঃ শাহিনুর আলম রাজনীতি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিষ্ট সরকারের রোশানলে পরে মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বারবার। শুধু বিগত ১৫ বছরেরই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ৮বার তাকে জেলে যেতে হয় এবং বিভিন্ন সময়ে প্রায় তিন বছর তিনি কারাভোগ করেন । সিরাজগঞ্জ-১ সংসদীয় আসনে জামায়াত কর্তৃক মনোনয়ন পাওয়ার আগে থেকেই মোঃ শাহিনুর আলম তার নির্বাচনী এলাকা কাজিপুরে যাচ্ছেন দলের নেতা-কর্মী সহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করছেন সমর্থন পাচ্ছেন। তাদের। মোঃ শাহিনুর আলম দলের চিন্তা, দল ক্ষমতায় গেলে কি কি করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরছেন জনগণের মাঝে। তিনি সাড়াও পাচ্ছেন বেশ। বিগত দিনের দুঃশাসন সম্পর্কে মানুষকে সজাগ করছেন। মোঃ শাহিনুর আলম বলেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য দল করি। কিন্তু বিগত দিনে আমাদের দলকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হয়নি। মামলা হামলা দিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতা- কর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। দেশের মানুষ বিগত দিনগুলোতে রাষ্ট্রীয় শাসন দেখেছে। সেটা কোনো শাসন ছিল না। ছিল শোষন এবং মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করার মহরা। অতীতে মানুষ যাদেখেছে, যা ঘটেছে আর তা দেখতে চায় না। বিগত দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় তবে সেই পরিবর্তন যেন জনগণের স্বার্থে হয়। তাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে দুঃশাসন নয় জনগণের সেবক হয়ে কাজ করবে। আমি একজন কর্মী হিসেবে দলের আদেশ নির্দেশ মেনে কাজিপুরের সকল সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে দেশের উন্নয়নের কথা বলা হলেও কার্যত সুষম কোনো উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নে বৈষম্য করা হয়েছে যার কারণে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ সঠিক উন্নয়ন পাননি। তিনি আরও বলেন সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে, সারা দেশের সাথে কাজিপুরেও পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়ন করা হয়নি। ভিন্নমতের ভিন্ন দলের মানুষ উন্নয়ন ও সুবিধা বঞ্চিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর সহ সারা দেশে এখনো লাখ লাখ বেকার রয়েছে। আমরা সরকারে গেলে বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারিভাবে সুষমভাবে বিভিন্ন মিল-কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হবে। পাশাপাশি সিরাজগঞ্জের ও দেশের শিল্প উদ্যেক্তাদের অনুপ্রাণিত করে কাজিপুরে ও সিরাজগঞ্জে বেসরকারি ভাবে শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হবে। কাজিপুরের উন্নয়ন বৈষম্য দূর করা হবে। এখানে প্রয়োজনীয় শিল্প- কারাখানা গড়ে তুলতে কাজ করা হবে। কাজিপুরের কম্বল শিল্প সারাদেশে পরিচিত। কুনকুনিয়া, ছালাভরা সহ এই এলাকার মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে নিজেদের উদ্যোগে কম্বল শিল্প গড়ে তুলেছেন। এখানকার কম্বল সারা দেশে যায় । স্বল্পমূল্যে ভালো কম্বল পাওয়া যায় বলে সারা দেশে এর চাহিদা রয়েছে। এই শিল্পের সাথে শতশত পরিবার জড়িত কিন্তু বিগত দিনে বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে এই শিল্পের উন্নয়নে সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা করা হয়নি। এখানে ব্যাংক সুবিধা প্রয়োজন। দূর থেকে যারা কম্বল ক্রয় করতে আসেন তাদের থাকার জন্য কোনো ভালো হোটেল নেই। অনেকটা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করে থাকেন। আমি নির্বাচিত হলে কম্বল শিল্পের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সকল কিছু করা হবে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও বাজারের উন্নয়ন করা হবে যার মাধ্যমে উৎপাদিত মরিচ, বাদাম ও ভুট্টা সহ বিভিন্ন ফসল চরবাসী নায্য দামে বিক্রি করতে পারেন, লাভবান হতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। অর্থাৎ নদী বেষ্টিত কাজিপুরের চর ও সমতলের মধ্যে সুষম উন্নয়ন করা হবে। কাজিপুরের উন্নয়নে বৈষম্যমুক্ত ইনসাফ মূলক সমাজ কায়েম করা হবে। মাদক সহ নানা প্রকার নেশায় পড়ে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যুবকদের চরিত্র ধ্বংস করা হয়েছে তাদের মেধাহীন করে ফেলা হয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে কাজিপুরকে মাদকমুক্ত করবো। যুবসমাজকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হবে এবং মাদককে প্রতিরোধ করা হবে। বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তিনি স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুতে বিশ্বাস করে না এবং তা সমর্থনও করে না। আমরা যেমন এই দেশের নাগরিক তেমনি এখানে বসবাসরত হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই এদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রীয় ক্ষতায় গেলে এখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। যার যার ধর্মের আচার অনুষ্ঠান তাদের মতো করে করবে। তিনি আরও বলেন, দেশের সকল ধর্মের, বর্ণের, গোষ্ঠি ও শ্রেণি পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে তাদের এক সাথে করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি মডেল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় ।পৃথিবীর বুকে বাংলাদেকে একটি মর্যাদাশীল জাতি ও দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। আর দেশের এই সার্বিক উন্নয়ন ও নতুন পথে চলার সাথী হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্র শ্রেণি পেশার মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন চায়। মোঃ শাহিনুর আলম বলেন, আমি কাজিপুর থেকে নির্বাচিত হলে সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্র ও শ্রেণি পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে দলমতের উর্দ্ধে উঠে কাজিপুরের সার্বিক উন্নয়ন করা হবে। এক্ষেত্রে তিনি কাজিপুরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: