Friday, 28 March 2025

সলঙ্গার তাঁতপল্লীতে বেড়েছে ব্যস্ততা

 


আনিছুর রহমান : মন্দাভাব কাটিয়ে ঈদকে সামনে রেখে আবারো সরগরম হচ্ছে সলঙ্গার তাঁতপল্লীগুলো। পবিত্র রমজানের ঈদুল ফিতরকে ঘিরে কর্মমুখর হয়ে উঠছে তাঁত পল্লীগুলো। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু করে রাতঅবধি পর্যন্ত তাঁত বুননের খট খট শব্দে শাড়ি, লুঙ্গী তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। তবে শ্রমিক সংকটের কারনে কারখানা মালিকদের এবারে বেগ পেতে হচ্ছে। বিভিন্ন নকসার শাড়ি, লুঙ্গী তৈরি করছেন কারিগররা। শ্রমিকদের উৎপাদিত প্রতিটি শাড়িতে আধুনিক ও শৈল্পিক কারুকার্যে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাহারী নকসা। তাঁত পল্লীতে পুরুষ শ্রমিকের সাথে পাল্লা দিয়ে নলি ভরা, সুতা প্রস্তত করা, মাড় দেয়াসহ বিভিন্ন কাজ করে চলেছেন।

রং, সুতা ও প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম বাড়তে থাকায় শাড়ি, লুঙ্গী তৈরির দামও বাড়ছে বলে জানান কারখানার মালিকরা। সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে তাঁতকুঞ্জ হিসেবে পরিচিত সলঙ্গার পাঁচলিয়া গ্রামটি যুগ যুগ ধরে সুপরিচিত। পাঁচলিয়া গ্রামকে তাঁতপল্লী হিসেবে সবাই চেনেন। গ্রামের এমন কোন বাড়ি নাই যে বাড়িতে ন্যুনতম ১০/২০ টি তাঁত নাই। সিরাজগঞ্জের নামকরা পাঁচলিয়ার কাপড়ের হাট।দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারী ক্রেতারা বাহারী শাড়ি, লুঙ্গী, গামছা কিনতে এ হাটে আসেন।

সলঙ্গার পাঁচলিয়ার শাড়ি, লুঙ্গী শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও স্থান করে নিয়েছে। ঈদ মৌসুম আসলেই সলঙ্গার তাঁতপল্লীগুলোতে কাজের চাপ কয়েকগুন বেড়ে যায়। শ্রমিক, মহাজনদের যেন দম ফেলার সময় থাকে না। এ সব কারখানায় তৈরি হচ্ছে বাহারি নাম আর নতুন নতুন ডিজাইনের জামদানি, সুতিজামদানি, কাতান, বেনারসি, কটন জামদানি, হাফ সিল্কসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি ও লুঙ্গী। পাঁচলিয়া, আমডাঙ্গা, হোড়গাতী, রতনকান্দি, বাদুল্লাপুর, তারুটিয়া, হাসানপুর, হাটিকুমরুল, জগন্নাথপুরসহ থানার বিভিন্ন গ্রামের উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গী পাইকারী ব্যবসায়ীদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

পাঁচলিয়ার বড় মহাজন আলহাজ্ব ইদ্রিস আলী জানান, পাঁচলিয়ার উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গীর সুনাম দেশ জুড়ে। তাঁতশিল্পে কিছুটা মন্দাভাব শুরু হয়েছিল। তার উপর আবার রং, সুতা ও প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি। অনেক তাঁত বন্ধ হয়েও গেছে। তার পরেও বাপ দাদার পেশা এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আমরা চেষ্টা করেই যাচ্ছি। ফারুক উইভিং ফ্যাক্টরির মালিক হাফিজুর জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে শ্রমিকেরা দিনরাত পরিশ্রম করে বাহারী রংয়ের শাড়ি-লুঙ্গী তৈরী করছেন, তাই তাদের জন্য ঈদ বোনাসের ব্যবস্থাও করেছি। আরেক মহাজন খলিল জানান, গত বছর ঈদে ব্যবসা ভালো হয়েছিল, এবারেও আশা করছি ব্যবসা ভালো হবে। মহাজন আরাফাত রহমান জানান, কাঁচামাল, রং, সুতার বাজার, শ্রমিকের মুল্য নিয়ন্ত্রণ করা গেলে আবারো ঘুরে দাঁড়াবে পাঁচলিয়ার ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: